আজকাল কার দিনে ছেলে হোক বা মেয়ে ট্যাটু করতে সকলেই পছন্দ করেন। ট্যাটু নিয়ে বিগত কয়েক দশকে জনপ্রিয়তা বাড়লেও, আসলে এটি এতি প্রাচীন এক শিল্পমাধ্যম। কিন্তু হালে এই শিল্পমাধ্যমটি সম্পর্কে যে নতুন এক তথ্য জানা গিয়েছে তা মোটেই খুব সুখকর নয়। সম্প্রতি এমনই একটি গবেষণায় সুইডেনের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন – ট্যাটু আঁকার দোকানে ব্যবহৃত কালিতে এমন কিছু রায়াসনিক উপাদান রয়েছে, যা বাড়িয়ে দিতে পারে ক্যানসারের আশঙ্কা ।
সম্প্রতি American Chemical Society-এর সম্মেলনে ড. জন সুইয়র্ক সহ অন্যান্য সুইডিশ বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, এই ট্যাটু বা উলকির কালিতে এমন কিছু উপাদান থাকে, যার ফলে হতে পারে ‘লিম্ফোমা’ বা রক্তের ক্যানসার । যে সুচ ফুটিয়ে বিশেষ রকম কালি দিয়ে ত্বকে ট্যাটু আঁকা হয়, তা অনেক সময়েই জীবাণুমুক্ত করা হয় না। এছাড়াও কালির মধ্যে থাকা ক্ষতিকর উপাদান তখন রক্তে মিশতে থাকে যা পরবর্তী সময়ে গিয়ে ক্যানসারের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এই উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম হলো বেঞ্জিন নামক উপাদানটি। বেশিরভাগ ট্যাটুর কালিতেই এই উপাদানটি বহাল থাকে। প্রায় ৫৬ ধরনের কালির নমুনা পরীক্ষা করে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ট্যাটুর কালি কোন কোন উপাদান মিশিয়ে তৈরি , তার বিস্তারিত বিবরণ কখনোই দেওয়া হয় না,ফলে যিনি ট্যাটু করাচ্ছেন, তিনি জানতেও পারেন না যে , কী কী ক্ষতিকর রাসায়নিক ট্যাটুর কালির মাধ্যমে তাঁর রক্তে ঢুকছে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন রকম ট্যাটুর কালি পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে , ওই কালিতে বেঞ্জিন ছাড়াও কার্সিনোজেনিক অ্যারোম্যাটিক অ্যামাইন, পলিসাইক্লিক অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বনের মতো ক্ষতিকর উপাদানও রয়েছে। যা রক্তে ঢুকলে ত্বকে সংক্রমণ, অ্যালার্জি হতে পারে এবং রক্তে বেশিমাত্রায় মিশলে, তা তলে তলে রক্তের ক্যানসারের কারণও হয়ে উঠতে পারে। এই সমস্ত কারণেই বর্তমানে ইউরোপের অনেক জায়গায় বিশেষ ধরনের নীল এবং সবুজ কালি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে শুধু রং নয়, রঙের মধ্যে থাকা কণাগুলির মাপও কখনও কখনও এই জাতীয় সমস্যার ক্ষেত্রে নির্ধারক হয়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। বহু মানুষই না জেনে এই ধরনের কালি ব্যবহার করেন এবং অজান্তেই তাঁরা নিজেদের বিপদ ডেকে আনছেন। ফলে এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ট্যাটুর কালির নমুনা পরীক্ষার আবেদন করেছেন তারা ।
সুইডেনের বিজ্ঞানীরা ১১ হাজার ৯০৫ জনকে নিয়ে একটি পরীক্ষা করেন। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। সকলেই শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাটু করিয়েছিলেন । বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এবং পরবর্তীতে দেখা যায়, ট্যাটু করার কয়েক বছরের মধ্যেই তাঁদের মধ্যে ২ হাজার ৯৩৮ জনের রক্তের ক্যানসার হয়েছে। এই সমীক্ষাটির পরেই তারা সিদ্ধান্তে আসেন যে “রক্তের ক্যানসারের ঝুঁকি ২১ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে এই ট্যাটু”।
তাই ট্যাটু করানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শরীরের কোন জায়গায় ট্যাটু করতে চাইছেন, তা চিকিৎসককে সবিস্তারে জানান। ট্যাটু করার আগে অবশ্যই আপনার শিরাগুলির অবস্থান সম্পর্কে জানুন । সঙ্গে এটাও জানুন , কোন রঙের কালি থেকে কী কী ধরনের বিপদ হতে পারে। এই সকল বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। ট্যাটু কোনও ক্ষতস্থানে হচ্ছে কি না , কোনও অ্যালার্জি, চুলকানি, র্যাশের আশঙ্কা আছে কি না, সে বিষয়ে আগে নিশ্চিত হন। আপনার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিরাপত্তার কারণেই এই সমস্ত তথ্য আগে ভালো করে জেনে নিন।
1 thought on “ট্যাটুর কালি থেকেই ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা! বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা।”
Hi Neat post There is a problem along with your website in internet explorer would test this IE still is the market chief and a good section of other folks will pass over your magnificent writing due to this problem