চল্লিশ পেরোলে মহিলাদের কিডনি সমস্যা দ্রুত বাড়ছে—এমনটাই জানাচ্ছে একাধিক আন্তর্জাতিক ও জাতীয় স্বাস্থ্য সমীক্ষা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, কিডনির অসুখ নীরবে বাড়ে, ফলে লক্ষণ ধরা পড়তে দেরি হয়। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে জীবনযাত্রার বেশ কিছু ক্ষতিকর অভ্যাস। বিশেষত চল্লিশের পর হরমোনের বদল, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, সুগার এবং স্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীনতা মিলিয়ে মহিলাদের কিডনি বিকলের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর তথ্য অনুযায়ী, অনেক মহিলাই জানেন না যে তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবিটিস রয়েছে। যখন রোগ ধরা পড়ে, ততদিনে কিডনির বড় ক্ষতি হয়ে যায়। তার সঙ্গে লুপাস নেফ্রাইটিস এবং ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা মূত্রনালির সংক্রমণও মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়—যা দীর্ঘমেয়াদে ক্রনিক কিডনি ডিজিজের ঝুঁকি বাড়ায়।
চল্লিশ পেরোলে মহিলাদের কিডনি সমস্যা কেন বাড়ে?
রোজকার পাঁচ অভ্যাসে বাড়ছে বিপদ
১. জল কম খাওয়ার অভ্যাস
অনেক মহিলা শৌচাগারের অসুবিধার কথা ভেবে জল কম খান। ফলে ডিহাইড্রেশন ও টক্সিন জমে কিডনিতে সংক্রমণ ও পাথরের ঝুঁকি বাড়ে।
২. নিয়মিত ব্যথানাশক সেবন
হাঁটু কিংবা কোমরের ব্যথায় অনেকেই নিয়মিত ব্যথানাশক নেন। এগুলি কিডনির রক্ত সরবরাহ কমিয়ে কিডনি বিকলের আশঙ্কা তৈরি করতে পারে।
৩. প্রস্রাব চেপে রাখা
এর ফলে মূত্রাশয় দুর্বল হয় এবং দ্রুত ইউরিনারি ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে। সংক্রমণ কিডনি পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
৪. কাঁচা নুন বেশি খাওয়া
অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়ায়, আর উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষুদ্র রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৫. অতিরিক্ত মিষ্টি বা চিনি খাওয়া
টাইপ–২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে কিডনির কোষ নষ্ট করতে পারে।
কী লক্ষণে বুঝবেন?
-
রাতে বারবার প্রস্রাবের বেগ
-
অবসাদ ও দুর্বলতা
-
খিদে কমে যাওয়া
-
বমি ভাব
-
রক্তচাপ ওঠানামা
এগুলির কোনওটি দেখা দিলে পরীক্ষা প্রয়োজন।
কিডনি সুস্থ রাখতে করণীয়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
-
দিনে ২.৫–৩ লিটার জল পান (ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী)
-
মিষ্টি, সোডা, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো
-
রোজ কমপক্ষে ২০ মিনিট শরীরচর্চা
-
পর্যাপ্ত ঘুম
-
বছরে অন্তত একবার
ক্রিয়েটিনিন ও ইউরিন অ্যালবুমিন টেস্ট
সবচেয়ে বড় কথা—নিজের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিন, অবহেলা নয়। কারণ “চল্লিশ পেরোলে মহিলাদের কিডনি সমস্যা” প্রতিরোধ সম্ভব, যদি সতর্ক থাকা যায়।








