হিন্দু ধর্মে নারকেলের ব্যবহার অনেক। নারকেল ছাড়া কোন ধার্মিক কার্য সম্পুর্ন হয় না। নারকেল সম্বন্ধে এক পৌরাণিক গল্প কথা প্রচলিত আছে। পৌরাণিক কথা অনুসারে ঋষি বিশ্বামিত্র দ্বারা নারকেলের জন্ম হয়েছিল।
বিস্তারিত ভাবে জেনে নেয়া যাক কিভাবে হলো এই নারকেলের জন্ম
পৌরাণিক কথা অনুসারে প্রাচীন কালে সত্যবত নামে এক রাজা ছিলেন। তাঁর ঈশ্বরের প্রতি পূর্ণ আস্থা ছিল। রাজা হবার দরুণ তাঁর কাছে সবকিছু ছিল কিন্তু তাঁর মনের একটা ইচ্ছা অসম্পুর্ণ ছিল। তিনি চেয়েছিলেন পৃথিবীলোক থেকে স্বর্গ লোকে যেতে জীবিত অবস্তায়। স্বর্গলোকের সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু কিভাবে তিনি স্বর্গ লোকে যাবেন তা তিনি জানতেন না।
একবার ঋষি বিশ্বামিত্র তপস্যা করার জন্য ঘর ছেড়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে তার পরিবার না খেতে পেয়ে চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। সেই সময় রাজা সত্যবত ঋষি বিশ্বামিত্রের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যতোদিন না তিনি ফিরে আসেন ততোদিন তাদের দেখাশোনা করেছিলেন। ঋষি বিশ্বামিত্র তপস্যা করে ফিরে এসে যখন তিনি সবকিছু জানতে পারলেন তখন তিনি খুব খুশি হলেন।
তিনি রাজা কে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য রাজসভায় গিয়েছিলেন। রাজা ধন্যবাদ স্বরূপ স্বর্গ লোকে যাবার জন্য একটা বর চেয়েছিলেন। রাজার কৃতজ্ঞতার দরুন তিনি স্বর্গলোকে যাবার একটা রাস্তা বের করেছিলেন। রাজা সত্যবত খুশি হয়ে স্বর্গ লোকে যাবার জন্য বেরিয়ে পড়লেন। যখন তিনি স্বর্গ লোকে দ্বারে উপস্থিত হলেন তখন ইন্দ্র তাকে বাধা দিলেন। রাজা সত্যবত গিয়ে ঋষি বিশ্বামিত্রের কাছে সবকিছু বর্ননা করলেন।
হাঁসের কালা কষা রান্নার রেসিপি
দেবতাদের এই রকম ব্যবহার দেখে তিনি রেগে গেলেন এবং তিনি দেবতাদের সঙ্গে কথা বলে একটা রাস্তা বের করলেন। রাজা সত্যবতের জন্য আলাদা এক স্বর্গ লোকের নির্মাণ করা হলো। এই স্বর্গ লোক পৃথিবী এবং আসল স্বর্গ লোকের মাঝখানে স্থাপিত হবে। এই কথায় রাজা সত্যবত খুব খুশি হলেন। কিন্তু ঋষি বিশ্বামিত্র খুশি হতে পারলেন না। তিনি একটা কথা ভাবতে লাগলেন যে এই স্বর্গ লোক পৃথিবী এবং আসল স্বর্গ লোকের মাঝখানে হবার জন্য জোরে হাওয়ার দরুন উল্টে যেতে পারে এবং রাজার নিচে পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
এর উপায় স্বরূপ ঋষি বিশ্বামিত্র নতুন স্বর্গ লোকের নিচে একটা দন্ড স্থাপন করলেন। সময়ের সাথে সাথে এই দন্ড একটা মোটা গাছে পরিনত হলো। রাজা সত্যবতের মৃত্যুর পর তাঁর মাথা একটা ফলে পরিনত হলো। এই জন্য এই দন্ডকে নারকেল গাছ এবং রাজার মাথাকে নারকেল ফল বলা হয়। এই জন্য নারকেল গাছ অনেক উঁচুতে হয়। এই কথা অনুসারে রাজা সত্যবতকে এক উপাধি দেওয়া হয়েছিল যে, না তিনি পৃথিবী লোকের বাসিন্দা না তিনি স্বর্গ লোকের বাসিন্দা।