কিশোর কুমারের মজাদার অজানা কিছু গল্প

interesting and funny facts of kishore kumar real life story

কিশোর কুমার এই নামটার সাথে বাঙ্গালীরা পরিচিত। কিন্তু তার জীবনের সাথে আছে বহু মজাদার ঘটনা। কিশোর কুমার 13/10/1987 সালে মাত্র 58 বছর বয়সে মারা যান। ওনার জীবনের কিছু মজাদার গল্প জেনে নিন –

বি আর চোপড়াকে কিশোর কুমারের আজব শর্ত

কিশোর কুমারের বিনোদি স্বভাবের শিকার একবার বলদেব রাজ চোপড়া হয়েছিলেন। কিশোর জির ভাই অশোক কুমার ও বি আর চপরা বন্ধু ছিলেন। পারিবারিক সমস্যার জন্য কিশোর জি একবার বি আর চপরা-র কাছে কাজ চাইতে গিয়ে ছিলেন। কিন্তু বি আর চপরা একটি শর্ত রেখে দিলেন। তখন কিশোর কুমার বলেছিলেন যে এখন আমার খারাপ সময় যাচ্ছে তাই তুমি শর্ত রাখলে, যখন আমার সময় আসবে তখন আমি ও শর্ত রাখব। এই কথা সবাই ভুলে গিয়েছিল কিন্তু কিশোর দা ভোলেননি। একবার যখন বি আর চপরা তার ফ্লিমে গান করার জন্য তার কাছে এসে ছিল, তখন কিশোর কুমারও একটা শর্ত দিয়ে ছিল। বলেছিল যে তিনি ‌যেন ধুতি পরে, পায়ে মজা দিয়ে জুত পরে মুখে পান দিয়ে মুখ লাল করে তার কাছে এসে বলতে। মজার কথা হল বি আর চপরা কখনো ধুতি পরতেন না এবং পান ও খেতেন না।

ঋষি কেশ মুখার্জি কে কিশোর জির গেট কিপার গেট থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন

একবার এক প্রজেক্টের কাজের জন্য এক নামী নির্দেশক কিশোর জির সাথে দেখা করতে গিয়েছিল কিন্তু গেট ম্যান তাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি এবং বের করে দিয়েছিল। কিন্তু এটা ভুল বোঝাবুঝি কারণে হয়েছিল। কারণ টা ছিল একবার কিশোর জি বাঙালিদের শো করেছিলেন কিন্তু তারা ঠিক মতো টাকা দেয়নি তাই তিনি বাঙালিদের ওপর রেগে গিয়েছিলেন। এবং তিনি তাঁর ওয়াচ ম্যান কে বলেছিলেন কোন বাঙালি তার সাথে দেখা করতে চাইলে তাকে যেন বের করে দেওয়া হয়। ঋষি কেশ মুখার্জি বাঙালি ছিলেন। তিনি যখন গিয়েছিলেন তখন ওয়াচ ম্যান তাকে ওই বাঙালি স্টেজ শো এর অর্গানাইজার ভেবে তাকে বের করে দিয়েছিল।

কিশোর কুমার থেকে সাবধান

লোকেরা নিজেদের বাড়ির গেটের সামনে লিখে রাখে কুকুর হইতে সাবধান কিন্তু কিশোর কুমার নিজের গেটের সামনে লিখে রেখে ছিলেন কিশোর কুমার থেকে সাবধান। একবার ডাইরেক্টার রাবেল টাকা দিতে ওনার ঘরে গিয়ে ছিলেন। টাকা দেওয়ার পর যখন হাত মেলাতে গিয়েছিলেন তখন কিশোর কুমার তার হাতে কামড়ে দিয়েছিল। রাবেল ঘাবড়ে গিয়েছিল এবং বলেছিল তুমি কি পাগল হয়ে গেছো তখন কিশোর জি বলেছিল তুমি ঘরে ঢোকার সময় বাইরের গেটটা দেখনি।

কিশোর কুমারের নানা উদ্ভট কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে এক পরিচালক কোর্টের সাহায্য নিয়ে ছিলেন

কোর্টের নির্দেশে ডিরেক্টর যা বলবে তাই কিশোর জির শুনতে হবে। পরের দিন শুটিং এ ডাইরেক্টর এর সব কথা শুনে ছিলেন। তিনি এক গাড়িতে শুটিং করছিলেন কিন্তু শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পর পরিচালক তাকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন নি বলে তিনি অনেকক্ষণ গাড়িতে বসে ছিলেন। ওই ফ্লিমের আর একটা শুটিং এ গাড়ি করে কিছু দূর গিয়ে নেমে যাওয়ার দৃশ্য ছিল। কিন্তু যখন শুটিং শেষ হলে পরিচালক কাট বলার সত্ত্বেও তিনি গাড়ি থেকে নামেননি। পরে জানা যায় তিনি ওই গাড়ি করে খান্ডালায় চলে গিয়েছিল।

কিশোর কুমার নিজের ঘরেতে মাথার খুলি ও হাড়গোড় ঝুলিয়ে রাখত

তার কারণ তিনি একা থাকতে পছন্দ করতেন। কেউ তাকে বিরক্ত করুক এটা তিনি চাইতেন না। ঘন ঘন ইন্টারভিউ দিতে পছন্দ করতেন না। তাই তিনি ঘরেতে এই রকম করে রেখেছিলেন এবং ঘরেতে রেড লাইট লাগিয়ে ভৌতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন। মজার কথা হলো তিনি নিজে ভুতের ভয় পেতেন।

হাফ টাকা হাফ কাম, ফুল টাকা ফুল কাম

একবার এক শুটিং এর জন্য প্রোডিউসার হাফ টাকা দিয়ে ছিল। তাই তিনি রেগে গিয়ে ছিলেন ও শুটিং করার সময় হাফ মেকআপ করে চলে এসেছিল। ডিরেক্টর ফুল মেকআপ করার কথা বললে তিনি বলেন হাফ টাকা হাফ কাম, ফুল টাকা ফুল কাম।

হে তলবার দে মে আট হাজার

কিশোর কুমার এর জীবনে এক মজাদার ঘটনা‌ ফ্লিম নির্মাতা আরশি তলবারের সাথে জড়িত। এক বার তিনি ওনার সাথে কাজ করছিলেন কিন্তু কিশোর জি কে কম টাকা দেওয়া হয়ে ছিল। কিশোর জি ছিলেন মজাদার মানুষ। তাই তিনি রোজ সকালে উঠে তলোয়ার নিয়ে তার বাড়ির সামনে গিয়ে বলতেন –

“হে তলবার দে মেরা আট হাজার,
হে তলবার দে মেরা আট হাজার।”