প্রয়াত সংগীতশিল্পী কেকে-কে নিয়ে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সংগীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচীর বিতর্কিত ভিডিও ঘিরে এখনও তোলপাড় শহর। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এখনও রূপঙ্করের বিরুদ্দে ‘ধিক্কার’ হ্যাশট্যাগে ভর্তি। কেকে বিতর্কের পর প্রথমবার মঞ্চে গান গাইতে উঠলেন রূপঙ্কর বাগচি। সম্পূর্ণ পুলিশি প্রহরায় রবিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার একটি অডিটোরিয়ামে পৌঁছোন রূপঙ্কর। হাতে গোনা কিছু দর্শকের সামনে পারফর্ম করেন তিনি। শুধু নিজের পছন্দের গান গাইলেনই না, এদিন দর্শকের অনুরোধও রাখলেন শিল্পী। মুখে স্বস্তির হাসি নিয়ে রূপঙ্কর স্টেজ থেকে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ”আজকের এই অনুরোধটা আমার প্রয়োজন ছিল।”
সংগীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচীর কাছে অনুষ্ঠান মঞ্চ মাতানো নতুন কিছু নয়। এদিন সন্ধ্যাতেও তাঁর ‘ওঁ চাঁদ’ গানটির সঙ্গে নাচতে দেখা গেল অডিটোরিয়ামে উপস্থিত কয়েকজন শ্রোতাকে। অবশ্য এবারের অনুষ্ঠান যেন একেবারে অন্যরকম। এইদিন ‘ও চাঁদ’, ‘’আমার মতে তোর মতন কেউ নেই’-এর মতো জনপ্রিয় বাংলা গান গেয়েছেন। তবে কেকে মারা যাওয়ার পর যেভাবে তাঁকে ঘিরে ধিক্কারের রব আর প্রতিনিয়ত হুমকি পাচ্ছেন তিনি ও তাঁর পরিবার, সে কথা ভেবেই এদিন অডিটোরিয়ামে কড়া পুলিশি পাহাড়ার ব্যবস্থা করা হয়।
প্রসঙ্গত, কলকাতায় ৩০ আর ৩১ মে কেকে-র শো নিয়ে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল তা নিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেছিলেন রূপঙ্কর। যাতে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন বাঙালিরা বাংলা গান নিয়ে এমন উন্মাদনা দেখায় না? সঙ্গে বলেছিলেন, ‘ কে কেকে?’ এমনকী তিনি ইমন, রাঘব, সিধুদের নাম নিয়ে বলেছিলেন এরা সবাই কেকে-র থেকে ভালো গান গায়। শুধু তাই নয় তিনি নিজেও কেকের থেকে ভালো গান করেন বলে দাবি করেছিলেন। সেই রাতেই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান কেকে। এরপর কার্যত প্রয়াত গায়কের ভক্তদের সব রাগ এসে পড়ে রূপঙ্করের উপরেই।
ইতিমধ্যেই কেকে-ইস্যুতে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈধক করেছেন রূপঙ্কর। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ‘প্রয়াত কেকে সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত কোনও বিদ্বেষ নেই। থাকার প্রশ্নও ওঠে না। আমি শুধু ওর কনসার্ট নিয়ে তৈরি হওয়া উন্মাদনা লক্ষ্য করে বলতে চেয়েছিলাম বাঙালি গায়কদের জন্যও আপনারা একইরকম দরদ দেখান…। পরলোকগত গায়কের পরিবারের কারোর সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। কিন্তু আপনাদের মাধ্যমে তাঁদের আবার জানাচ্ছি যে, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কেকে আজ যেখানেই থাকুন ,ঈশ্বর যেন ওঁকে শান্তিতে রাখেন।’
রূপঙ্কর আরও বলেন, ‘গায়ক হিসাবে দেশে বিদেশে বহু মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, স্বীকৃতি পেয়েছি। মুহূর্তের অসতর্কতা এই রকম গনগনে এবং মারমুখি আবেগ বয়ে আনবে কে জানত তা! এত ঘৃণা, এত আক্রোশ। এটা অনেকটাই তৈরি হয়েছে আমি আমার বক্তব্য গুছিয়ে বলতে না পারার কারণে।”