হনুমান শ্রী রামচন্দ্রের পৃষ্ঠেপোষক ছিলেন এ আমরা সবাই জানি। দেবতা হয়েও বজরংবলী শনিরকে দৃষ্টি এড়াতে পারেননি। শনি তাকেও ছাড়েনি। কর্মফল দাতা বলা হয় শনিদেব কে। শনিদেব সূর্য আর ছায়ার পুত্র। তিনি মানুষের কর্মের উপর ভিক্তি করে তার ফল দান করেন। তার হাতে থেকে কারুর ছাড় নেই। শনির দৃষ্টি কে শুধু মানুষ ভয় পায় এমন নয় দেবতারাও এড়িয়ে চলতে চায়।
হনূমান পর্বতের ওপর বসে তার আরাধ্য ভগবান রামচন্দ্রের ধ্যান এ মগ্ন। এমন সময় শনি দেব হনূমানজির সামনে এসে উপস্থিত। শনিদেব বজরংবলী কে জানালেন যে, আমি আপনার ওপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করবো, আপনার জীবনের সাড়ে সাতির প্রভাব পড়বে —
হনুমান জানতে চাইলেন তাকে কী ভোগান্তি পোহাতে হবে। শনি বললেন যে “প্রথমে আমি আপনার মাথায় আসব এবং এটি আপনাকে আপনার বাড়ি, স্ত্রী এবং পুত্রদের ছেড়ে থাকার দুঃখকষ্টে বাধ্য করব৷ হনুমান বলেছিলেন যে শনি অবশ্যই তাঁর মাথায় আসতে পারেন এবং তার কোনও পরিবার না থাকায় তিনি খুব বেশি কষ্ট পাবেন না ৷ তার পরিবারের প্রতি এবং যেহেতু তার বাসস্থান ভগবান রামের পায়ের কাছে, তাই তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে তিনি সেই কষ্টও সহ্য করতে পারবেন। তাই শনি হনুমানের মাথায় আশ্রয় নেন। শনিদেব হনূমানজির মাথায় এসে বসলেন। মাথায় শনিদেব বসা মাত্রই একটা ভারী পর্বত শনি দেবেন মাথার ওপর চাপিয়ে দিলেন।পর্বতের ভারে শনিদেব ছোটকাতে লাগলেন। এরপর আবার একটা পর্বত তার ওপর রাখলেন। শনিদেব এই চাপ সহ্য করতে পারছিলেন না। হনুমান যখন আরো একটা পর্বত চাপাতে যাবে সেই সময় শনিদেব বজরংবলীর কাছে অনুরোধ করলেন তাকে যেন হনুমানজী চাপ মুক্ত করেন ।
অবশেষে, শনি হনুমানের মাথা থেকে সরে গিয়ে বললেন, তুমিই একমাত্র যার উপর আমার অশুভের কোন প্রভাব পড়বে না। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে পারব না। যেহেতু আপনি আমাকে রাবণের কারাগার থেকে রক্ষা করেছেন, আমি আপনাকে একটি বর দিতে চাই। বর হিসাবে, হনুমান ভগবান শনিকে তার ভক্তদের কষ্ট না দিতে বা খারাপ নজর না দিতে বলেছিলেন। ভগবান শনি হনুমান ভক্তদের কষ্ট বা কষ্ট না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শনিদেব যখন মুক্ত হলেন, তিনি হনুমানকে জিজ্ঞাসা করলেন – “আমার এই অসহ্য যন্ত্রণা দূর করার জন্য আপনি কি আমাকে কিছু তেল দিতে পারেন?” তারপর হনুমান শনিদেবকে কিছু সরিষার তেল দিলেন, সেই তেল তাঁর শরীরে মালিশ করলে তাঁর ব্যথা সঙ্গে সঙ্গে উপশম হয়। সেই থেকে শনিদেবের নামে কিছু সরিষার তেল দেওয়ার কথা বলা হয়ে আসছে। এটা তার ব্যথা প্রশমিত করার প্রতীকী, তিনি সন্তুষ্ট বোধ করেন এবং এটি তাকে রামের ভক্তের প্রতি দয়ালু করে তোলে। তাই শনিবার যারা হনুমানের পূজা করেন তারা শনির দোষে প্রভাবিত হয় না।